এর এক সপ্তাহ পরে ক-র বাড়ি গিয়েছিলাম। ওনার স্ত্রী, যিনি আমাকে নিকট আত্মীয় ও আপনজনের মতো দেখতেন, তাঁকে বললাম হোমিওপ্যাথির বাক্সদুটো দেখব। উনি বাক্স নিয়ে এলে পরে ডালা খুলে দেখলাম এখনো প্রতিটি বাক্সে দুটো করে চিরকুট রয়ে গেছে। চারটে চিরকুটেই লেখা ‘বিয়ে নয়’। ক-র দর্শন নিয়ে যে গবেষণা বন্ধ করেছি তা নিয়ে আর ক্ষোভ হল না, ভাবলাম ক আসলে ভাল দার্শনিক ছিলেনই না। উনি বলতেন স্বাধীন চিন্তা ও অদৃষ্টবাদ দুটিই বিভ্রম, কিন্তু সেটা যে বিভ্রম নয় তা প্রমাণ করতেই হয়তো আমি রেবাকে বিয়ে করেছিলাম। আমার স্বাধীন চিন্তাকে প্রতিষ্ঠা করতে যে আমি যে এটা করব সেটা ওনার বোঝা উচিত ছিল। ক নিজের দর্শনে বিশ্বাস না করে নিম্নমানের এক পদ্ধতিতে আমাকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন, যৌন-নিপীড়করা বোধহয় তাদের বৌদ্ধিক দর্শন জীবনে আরোপ করতে পারে না। ফিরে এসে রেবাকে কথাটা বলতে ও বলল, “তাহলে ক সবকটা চিরকুটে ‘বিয়ে’ লিখলে তুমি আমাকে বিয়ে করতে না – শুধুমাত্র তোমার স্বাধীন ইচ্ছার তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে?” ... ...
চোখে পাখি গেঁথে থাকা একটা আলো হুড়মুড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ল্যাংড়াবাড়ির ঘাসগুলোতে। এই সময় গাছের গায়ে লাঠা হয় খুব। সারি সারি লাল পিঁপড়া লাঠা পায়ে চলতে থাকে ঘাসের উপর। ঘাস চ্যাটচ্যাট হয়ে যায়। কেঁচো খেতে নামা পাখির ঠোঁট ঘাসে আটকে যায় কখনও, দু-এক সেকেন্ড। যুতসই মওকা বুঝে, উদবিড়াল পাখি মুখে গাছে চড়ে বসে। এইসব সময়েই আলো হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে ল্যাংড়াবাড়ির ইতিউতি। যাদের কান ভালো তারা এসময় গাছেদের বাতচিত শুনতে পায় শুনশান আমের বাগান পেরোতে পেরোতে। আজ গাছেরা কথা বলছে না। কিংবা যে দুটি ছেলে, বাগানের ভিতর দিয়ে এমনভাবে পা ফেলছে যেন সাপের মতো বয়ে চলা সময়ের জিভ পার করে তারা আলজিভে ঢুকে পড়বে অন্য কোনো সময়ের, তাদের এখনও গাছেদের কথা শোনার কান পেতে বাকি আছে খানিক। উত্তর থেকে হাওয়া বওয়া বন্ধ হয়েছে দিন কয়েক আগে। দখিনা আর পছিয়ার আসতে আরও কয়েক দিন। এসময় গুড্ডি উড়াতে বেশ লাগে। ... ...
রামপ্রসাদ সেনের বিভিন্ন ধরনের উপাসনামূলক গানের ভিতরেও যেভাবে বাংলার কৃষি সমাজের তৎকালীন পরিস্থিতির বিববরণ আমরা পাই, সেই দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু রামপ্রসাদের অনেক আগে থেকেই সুফি সাধকরা বাংলায়, তাঁদের বিভিন্ন ধরনের সাধনার তরিকার ভেতর দিয়ে উপস্থাপিত করতে শুরু করেছিলেন। এই দিক থেকে বিচার করে বলতে হয় যে, সুফি সাধনাতে এই অর্থনীতি ভিত্তিক আধ্যাত্মিক ভাবধারাকে রামপ্রসাদ সেনও কি অনেকাংশই গ্রহণ করেছিলেন? সেই চেতনা আমরা উনিশ শতকের সমন্বয়বাদী ধারার প্রধান সাধক শ্রীরামকৃষ্ণের ভেতরেও দেখতে পাই। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে গুরু গোবিন্দ রায় (ওয়াজেদ আলি খান) এর কাছ থেকে ইসলাম ধর্মের মূল মন্ত্র এবং কলমা গ্রহণ করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। পবিত্র কোরানের মতে কলমা হচ্ছে স্বীকারোক্তি এবং দেহ মন শুদ্ধির উপাসনা মন্ত্র। ... ...
এবার বাহাত্তর দেখল দিঘির মাঝখানে জল সামান্য পাক খাচ্ছে। ফাল্গুন চৈত্রে ফাঁকা মাঠে যেমন শুকনো বাতাসের ঘুর্ণি ওঠে, ধুলোবালি, শুকনো পাতা, ছেঁড়া কাগজ – সব শূন্যে তুলে নেয় সেই বাতাস, পুকুরের মাঝখানে ঠিক তেমন একটা জলের ঘুর্ণি আস্তে আস্তে নীচের দিকে টান দিতে শুরু করেছে। বাহাত্তরের কত বার ইচ্ছে হয়েছে গরম বাতাসের সেই ঘুর্ণির ‘চোখ’-এ ঢুকে পড়তে। দেখি না, কী হয়। যদি বাতাস তাকে শূন্যে উড়িয়ে নিয়ে যায়, যদি অনেক দূরের এক অচেনা দেশে নিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়, যেখানে কেউ তাকে হারামজাদা বলবে না, বাপঠাকুরদার নাম জানতে চাইবে না। ... ...
এই অ্যাপার্টমেন্টটায় এসেছে মাস গড়ায়নি। আটতলা বাড়ির পঞ্চম তলায় ওরা। পাশাপাশি এরকমই লম্বা ফ্ল্যাটের দুটো সারি, আটটা ব্লক মুখোমুখি। সেরকমই কোন পাশের বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখছে শৈলী। ছি:, শৈ কী করছো বলো তো? অন্যের বাড়িতে উঁকিঝুঁকি মারছ! বিরক্তির সঙ্গে সঙ্গে গলার স্বরটা উঁচুতে উঠছিল সুকোমলের। ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বলল শৈলী। ডান হাত দিয়ে সুকোমলের কবজি ধরে টান দিল। কী ব্যাপার, চোর টোর নাকি? দেওয়াল বেয়ে উঠছে? সুকোমল এসে জানালার বাইরে চোখ রাখল। পাশের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকটার জানালাটা একদম মুখোমুখি, মাঝখানে ফুট তিরিশেকের ব্যাবধান। সেই জানালার পর্দা পুরো সরানো। সেখানে চোখ পড়তেই চমকে উঠল সুকোমল। এ কী দেখছে? ... ...
সেদিন কবুতর দুটো উড়তে পারছিল না। একটার মাথা থেকে ময়ূর-পেখমের মতো নীল পালক ক্রমান্বয়ে হালকা হতে হতে লেজ অবধি সাদা। গলার কাছে ফোলা ফোলা গাঢ় নীল পালক। আরেকটা কবুতর ছিল দুধসাদা। দুটো কবুতরের ডানাতেই লাল স্কচটেপ আটকানো ছিল। কবুতর জোড়া ফরিদ ভাইয়ের কাছ থেকে কিনেছিলাম আমি। দাম ছিল আশি টাকা। ফরিদ ভাই কিছুতেই দাম কমাচ্ছিল না। আমার সৎ মায়ের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে সেদিন সকালে একশ টাকা সরিয়ে ছিলাম আমি। ফেরার সময় লাতু কাকার ‘দি হাতেখড়ি বুকস্টোর’ থেকে একটা স্কচটেপও কিনেছিলাম। ... ...
আমি ঘুরে তাকালাম। টিল্ডা সিগারেট ফুঁকছে। তার গায়ে কোন কাপড় নেই। বিছানার চাদর মেঝেতে গড়াগড়ি খায়। ধোঁয়া তার মুখ ঢেকে দিচ্ছে। আমি কাঁপা কণ্ঠে বললাম, কিন্তু আমি যে স্পষ্ট দেখলাম? টিল্ডা বলল, সে আসে। কারণ এইরকম কিছু তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ছিল। যখন ওইদিনের মত পরিস্থিতি তৈরি হয় এখানে, যেন সময়ের পুনরাবৃত্তি হয়, তখন সে আসে, আবার চলে যায়। আমি দেখতে পাই না। কিন্তু আমার ভাবতে ভাল লাগে যে সে আমার কাছাকাছি আছে। অন্তত এইভাবে হলেও। ... ...
পিছনে পড়ে রইলো যতো বিশ্বাস আর অবিশ্বাস। ভিড়টা চুপ হয়ে ফিরে আসছে। শুধু জগৎ বাউরি কী ভেবে গঞ্জের মানুষগুলোর উদ্দেশ্যে বললো, দেকলেন তো বাবুরা, মানুষটার ক্ষেমতা! উত্তরে গঞ্জের মানুষগুলো কিছুই বলছে না। ওরা ওদের দামি বাহারি পোশাকও অমন করে ছেঁড়ার প্রতিযোগিতায়ও নামছে না। জগৎ বাউরি ওদের মুখের দিকে তাকিয়েই আছে, কিন্তু ওদের মনের ভিতরের কথা কিছুতেই পড়তে পারছে না, যেমনটা সে বনবাবারটা পারতো। ... ...
এইসব অনেক দিন ধরে মিলিয়ে দেখে দেখে তবে ফুলমণি বুঝেছে মানুষের মতোই জঙ্গলের রূপের কোনো ঠিক নাই। সে খালি পালটায়। ঠা ঠা রোদ্দুরে সে একরকম, তো কালো মেঘের নিচে একেবারেই অন্যরকম। রহস্যময়, গহন। আবার শীতের ভোর ভোর খেতখামার, চাষের মাঠে মাকড়সার জালে বিন্দু বিন্দু শিশির আটকা পড়লে জঙ্গল বড় শান্ত, যেন মাহাতো বাড়ির বিয়ার যুগ্যি বড় মেয়েটা। ... ...
আমি একটু আহত মুখে আমার পড়ার টেবিল থেকে নীলচে কভারের ‘কালেক্টেড ফিকশনস’ বইটা এনে ওর সামনে ফেলতাম; সেটাই তখন আমার সংগ্রহের সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন। আমি বোর্হেসের মতো লেখক হব, আমি ঘোষণা করতাম। — বোর্হেস কে? — সে অবাক হয়ে জানতে চাইত। বিশ শতকের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠতম লেখক, আমি কায়দা করে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলতাম, প্রথমজন অবশ্যই ফ্রাঞ্জ কাফকা। বোর্হেস সম্পর্কে আমার মুগ্ধতা, বলা বাহুল্য, শুধু সাহিত্যগত কারণে ছিল না। বোর্হেস যে মায়ের পরিবারের রীতি অনুযায়ী সৈনিক হতে না চেয়ে বাবার বিশাল লাইব্রেরির ভেতর আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিলেন, এইটা আমাকে দারুনভাবে টানত। তেহরানের দিনগুলোয় যেসব উদ্ভট নিষেধাজ্ঞা আমাদের সহ্য করতে হতো, ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন বাসিজের খপ্পরে পড়তে পড়তে কয়েকবার আমি ও আমার বন্ধুরা বেঁচে যাই, এসবকিছুর মধ্যে বোর্হেসের আয়না ও গোলকধাঁধার জগতে ঘুরে বেড়ানো ছিল আমার জন্যে সব থেকে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। ... ...
কিসের বই তা জানে না মানোয়ারা, শুধু তার প্রথম পাতায় লেখা ‘আশিস চৌধরি’। এই নামটা আম্মি বারে বারে লেখাত। নামটা যে আব্বুর, সেটা মানোয়ারা জেনে ফেলেছিল। আম্মিকে আর জিজ্ঞেস করার দরকার পড়ে নি। আম্মির কথায় ও শুধু বড় বড় অপটু হরফে লিখত, আশিস চৌধরি। একটা কুড়িয়ে আনা পেন্সিল আঁকড়ে। হলদেটে কাগজের উপর আবছা লেখা। আম্মি মারা যাওয়ার পর আবার একদিন কাগজের তাড়াটা নিয়ে বসেছিল মানোয়ারা। আগের লেখাগুলো আর পড়াই যায় না, এতই আবছা। আম্মি মারা যাওয়ার পর এই ঘরটার অলিখিত মালিক হয়ে গেছে মানোয়ারা। কে যেন একবার বলেছিল, বাচ্চা মেয়ে, একা থাকলে জিন-পরিতেও ধরতে পারে, নাজনিনের ঘরের মেঝেতে শুক বরং ও। তাতে খালা ভাগ্যিস রাজি হয় নি। খুব কেঁদে কেঁদে বলছিল, “কী দোষ করেছি আমি যে আমার ঘরে ওই বেজন্মা বাচ্চাটাকে ঢোকাতে বলছ?” ... ...
মেয়েমদ্দ বাচ্চারা পালাতে চাইছিল। ওরা মেয়েদের টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, বাচ্চাদের আগুনে ছুঁড়ে দিচ্ছিল আর মরদদের মাথায় বাড়ি। বলতে বলতে সুরজ কাঁপছিল, গোঙাচ্ছিল। ইসমাইল ওকে জল খাওয়ায়, জিগ্যেস করে লুটেরারা কোন ধ্বনি দেয় নি? সুরজ কেমন চুপ হয়ে যায়, খুব আস্তে বলে ‘আল্লা হু আকবর’ তারপর বাতাসের স্বরে ফিসফিস করে বলে ‘আমি দেখেছি ওদের অনেকের কপালে কমলা টিকা ছিল, লিডারের হাতে প্রধান নৌকরজির ফোটু ছিল’। ইসমাইল ঝাঁকি দিয়ে সোজা হয়ে বসে সুরজের মুখ চেপে ধরে ‘চুপ চুপ। খবরদার এইসব এখানে আর কাউকে বলবি না, আমার জানও চলে যাবে। ... ...
জাবেদা, রুমেলা, ফতিমা মেয়েটাকে ছেঁকে ধল্লো। পতমত একুন তো হিঁদু মেয়েছেলে মোসলমান মেয়েচেলে আলেদা করা যায় না। বড়ঘরের হিঁদু মেয়েচেলেরাও সিঁদুর পরেনা, শাকা পরে না। আর গরিবঘরে নিয়মমতো হিঁদু মোসলমান মেয়েচেলে আলাদা করাই যায় বটে কিন্ত একুন সবার মুকে ত্যানা। মাতায় মোসলমান মেয়েমানুষের মত কাপড়জড়ানো। এ মেয়েটার হাত ফাঁকা। এমনিতেই হিঁদু না মোসলমান? জাবেদা হাত ধরে জোরে ঝাঁকালো। ... ...
এই ধুতি পাঞ্জাবি কখনো কাছ থেকে আমরা দেখিনি। দেখার সুযোগই দেননি। ঠাকুরদা সবার স্পর্শ বাঁচিয়ে তাদের রাখেন। বলেন, অতিথি এলে তিনি পরবেন। হলুদ ইলিশ রাঁধা শেষ হলে তাকে নিয়ে খেতে বসবেন। অতিথি তখন কাঁসার থালায় হাত দিয়ে গিয়ে আলাদা এক সম্ভ্রম নিয়ে দেখবেন এই প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তানকে। দেখবেন, চাঁদ নম্র হয়ে নেমে এসেছে ঠাকুরদার মাথার উপরে। মলয় পাহাড় থেকে ছুটে এসেছে স্নিগ্ধ হাওয়া। কোথাও বেজে উঠেছে পাখোয়াজ। অতিথি খাওয়া ভুলে যাবেন। একটু বেশি রকম ঝুঁকে বলবেন, আপনাকে কুর্নিশ করি। কুর্নিশ গ্রহণ করুণ হে মান্যবর। ... ...
রাজুর সাথে দু মেয়ের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে নষ্ট হয়েছে তাতে রাজুর উপর পূরবীর পূর্ণ সহানুভূতি রয়েছে। অনেক বার গোপনে আলোচনা হয়েছে মা মেয়েদের ভেতর। পূরবী ছাড় দিতে চাইলেও ওরা ঘোর আপত্তি জানিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পূরবী প্রশ্ন তুলেছে, তোরা কেন এখন কনজারভেটিভ হচ্ছিস ? তোদের বাবার কি অধিকার নেই স্বাভাবিক জীবন যাপনের ? একজন পঙ্গু, খোঁড়া স্ত্রীর সাথে আর কতকাল সে থাকবে? এটা জোর অন্যায় হচ্ছে। তোদের বাস্তবতা বোঝা উচিত। ... ...
আমার সম্পর্কে আমি যা জানলাম তা হল, আমি মানুষকে আত্মহত্যাচিন্তা দূর করতে সাহায্য করতাম। গায়ে আগুন দেওয়ার আগে, বসার ঘরে দাঁড়িয়ে গায়ে কেরোসিন ঢালার পর, কেরোসিনের বোতল রান্নাঘরে আমি রেখে আসলেও আসতে পারি। আমার স্বামীরও আমার মতো একাধিক নিজেকে খোঁজার ও খুঁজে পাওয়ার বাতিক আছে। কারণ আমার স্বামী প্রথমবার দাবী করেছেন তিনি ঘটনার সময় অন্য ঘরে ল্যাপটপে কাজ করছিলেন। পরে আবার এটাও দাবি করেছেন, ঘটনার সময় তিনি সিগারেট কিনতে বাইরের দোকানে গিয়েছিলেন। আমার ছোটোবেলার বন্ধুদের সাথে আমার যোগাযোগ ছিল বরাবর। তারা প্রত্যেকে আমার উপর এতকাল ধরে হয়ে আসা অত্যাচারের খবর জানতো। আমি আমার স্বামীর নামে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি আগে একাধিকবার। আমার স্বামী প্রতিবার জামিন পেয়ে ফিরে এসে আরও আরও আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগে আমি বাধ্য হয়ে আমার এক বন্ধুর বাড়ি চলে গেছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে আমার কর্মস্থল দূর হয়ে যাওয়ায় আমাকে ফিরে আসতে হয়। স্রেফ এই কারণে আমি সেদিন আমার অভিজাত আবাসনে উপস্থিত ছিলাম। এই কারণে সেদিন আমি আমার গায়ে আগুন লাগাতে পেরেছি। এছাড়া আমার মৃত্যুর আর কোনো কারণ নেই। ... ...
পায়ের তলে পদ্মরেণু, মুঠোয় গহন দীঘি চোখের ভিতর উড়ছে আকাশপ্রদীপ আফ্রোদাইতি,ম্যাজিক ছিলো,তোমার গ্রীবাস্থলে ... ...
তুমি উৎসব, তুমিই সেই চাঁদ দেখে ছুটি দিয়েছো কত চাঁদকে আঁকার ঘরে তোমাকে ঘিরে ছিল যারা সবাই এতক্ষণ ঘুমিয়ে গেছে ওদের চুলে হাত বুলিয়ে শুতে গেছে অন্য কেউ এঁকেছে চোখের পাতায় চুম্বন ... ...